This news has no attached video clip.

প্রয়াত বিষ্ণু দত্তের স্মরণে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ সভা

Wednesday, May 21, 2025
Total Views: 107

নিজস্ব প্রতিনিধি।।উদয়পুর, ২১ মে- বিভাজন ও শোষনের রাজনীতির বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভকে সংহত করুন। ভয়কে জয় করে জনগণকে এককাট্টা করে সাহস ও আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে শ্রেনীশত্রুর বিরুদ্ধে সংগ্রাম, লড়াইকে মজবুত করার দায়িত্ব নিন। মির্জায় উপছে পড়া পার্টি নেতৃত্ব, কর্মী ও সাধারন মানুষের উপস্থিতিতে প্রয়াত সিপিআই(এম) নেতা বিষ্ণু দত্তের স্মরণ সভায় এই আহ্বান জানান সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রতন ভৌমিক। বিজেপির শাসনকালে মির্জা কমিউনিটি হলে সিপিআই(এম)-এর প্রথম সভা ছিল বুধবার। মির্জা থেকে উঠে আসা কমিউনিষ্ট আদর্শের প্রতি দৃঢ়চেতা নেতা বিষ্ণু দত্তের প্রয়ান সিপিআই(এম)-কে এদিন সুযোগ করে দিয়েছিল কমিউনিটি হল ব্যবহারের। প্রিয় ও ভালোবাসার নেতার প্রতি পার্টি-সহ সাধারন মানুষের উজাড় করা ভালোবাসার প্রতিফলন ঘটলো কমিউনিটি হলে। উপছে পড়া উপস্থিতি প্রমান করেছে সিপিআই(এম) উদয়পুর বিভাগীয় কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক প্রয়াত বিষ্ণু দত্তের জনপ্রিয়তা। এদিন হল ভর্ত্তী জনগণের উপস্থিতিতে বিষ্ণু দত্তকে স্মরণে রেখে স্বৈরাচারী শাসক বিজেপি'র বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শপথ নিলেন লালঝান্ডার সৈনিকরা। সিপিআই(এম) উদয়পুর মহকুমা কমিটির উদ্যোগে এদিন প্রয়াত বিষ্ণু দত্তের স্মরণে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ সভা। সভার শুরুতে প্রয়াত নেতার প্রতিকৃতিতে ফুলমালায় শ্রদ্ধা জানান সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রতন ভৌমিক, জেলা সম্পাদক পরিমল দেবনাথ, মহকুমা সম্পাদক দিলীপ দত্ত, জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নিতাই বিশ্বাস, শ্রীবাস দেবনাথ, সুনীতি সাহা-সহ জেলা, মহকুমা নেতৃত্ব ও প্রয়াত বিষ্ণু দত্তের ছেলে বিপ্লব দত্ত, মেয়ে বানী দত্ত, ভাই অমল দত্ত প্রমুখরা। শোকপ্রস্তাব উত্থাপন করেন পার্টির মহকুমা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য শ্যামাপ্রসাদ গোস্বামী। সভায় পার্টির মহকুমা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নিখিল দাসের সভাপতিত্বে রতন ভৌমিক ছাড়াও বক্তব্য রাখেন জেলা সম্পাদক পরিমল দেবনাথ, মহকুমা সম্পাদক দিলীপ দত্ত, প্রয়াতের ছোট ভাই অমল দত্ত। উল্লেখ্য গত ১৭ মে সিপিআই(এম) উদয়পুর বিভাগীয় কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক, আদর্শে অবিচল মার্কসবাদী দৃঢ়চেতা নেতা বিষ্ণু দত্ত প্রয়াত হয়েছিলেন। জনদরদী নেতা বিষ্ণু দত্তের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ও কাজ স্মরণ করে রতন ভৌমিক আলোচনায় বলেন, প্রয়াত বিষ্ণু দত্ত সবার থেকে ছিলেন ব্যতিক্রমী, মার্কসবাদের প্রতি ছিল দৃঢ় আস্থা। সমাজ পরিবর্তনের মূল লক্ষ্যে ছিল দৃঢ় অবস্থান। বিভাগীয় সম্পাদক হওয়ার পর তাঁর পরিকল্পনা ও পার্টির ঐক্যবদ্ধ কাজ উদয়পুরের পার্টির ব্যাপক বৃদ্ধি হয়েছে-এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। সংসদীয় ঝোঁক কোন সময় প্রয়াত বিষ্ণু দত্তকে গ্রাস করেনি, বরং নিজেই এর থেকে দূরে থেকে জনগণকে লড়াইয়ের মূলস্রোতে নিয়ে আসার দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে গেছেন। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত ভাবে ফুটবল মাঠে প্রথম সম্পর্ক বিষ্ণু দত্তের সাথে। তারপর থেকে দেখেছি '৮০ সালের ভ্রাতৃঘাতি দাঙ্গা, কংগ্রেসের জোট শাসনকালে অত্যন্ত দৃঢ় ও বলিষ্ঠ ভূমিকা নিয়ে আদর্শ নেতৃত্বের জায়গায় নিজেকে স্থান করে নিতে। আক্রান্ত কর্মী থেকে সাধারন জনগণের সাথে নিবিড় সম্পর্ক রাখার ক্ষেত্রে প্রয়াত বিষ্ণু দত্ত সকলের কাছে অনুকরনীয়, অনুপ্রেরনা। তিনি বলেন, বিজেপির শাসনে দেশের ও রাজ্যের অবস্থা ভয়ঙ্কর খারাপ। মানুষকে বিভাজনের রাজনীতি ও কর্পোরেট মালিকরা একসাথে মিলে ভাগ এবং গরীব মানুষকে বিপদে ফেলার নীতি গ্রহণ করে চলছে বিজেপি।সরকারের বিদেশনীতি সব রাষ্ট্রের কাছে ভারতকে এরা অচ্ছুৎ জায়গায় নিয়ে গেছে। দেশের সংবিধানকে পরিবর্তন করতে চাইছে। সাম্প্রতিক পহেলগাঁও-এর ঘটনায় নিরাপত্তার চরম দূর্বলতার কথা শিকার না করে ধর্মীয় বিভাজন রেখা টানা হচ্ছে। রতন ভৌমিক বলেন, ত্রিপুরায় সাত বছরের বিজেপি জোট শাসনে একই অবস্থা। চাকরীর প্রতিশ্রুতির রূপায়ন নেই, রেগায় কাজ নেই। এডিসি এলাকার উপজাতি জনগণের আরো বেহাল অবস্থা। ভিলেজ নির্বাচন নেই। স্বাধীন ত্রিপুরা, গ্রেটার ত্রিপ্রাল্যান্ডের কথা যারা বলেছিল সেই দলগুলির এখন কোন বক্তব্য নেই। উল্টো বিজেপি-আইপিএফটি-ত্রিপ্রা মথা মিলে লুটপাঠ চালাচ্ছে। এদের অপশানের বিরুদ্ধে রাজ্যের বেশির ভাগ মানুষ। বিষ্ণু দত্ত দেখিয়ে গেছেন কিভাবে অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়। তাঁর জীবন ও লড়াই থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আগামীর লড়াইকে তীব্র বেগবান করার দায়িত্ব নিয়ে প্রয়াত বিষ্ণু দত্তের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান জানান তিনি। স্মরণ সভায় জেলা সম্পাদক পরিমল দেবনাথ বলেন, জনগণের উপস্থিতি প্রমান করে বিষ্ণু দত্ত ছিলেন জনগণের প্রিয় নেতা। পার্টির নীতিকে জনগণের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন বলেই সকলের গ্রহণীয় হয়ে উঠতে পেরেছিলেন। নির্ভিক নেতৃত্ব জনগণের সুখ-দুঃখে ছিলেন পাশে। অনুকরনীয় জীবন থেকে সঠিক শিক্ষা নিতে পারলেই প্রকৃত কাজ হবে। পার্টির উদয়পুর মহকুমা সম্পাদক দিলীপ দত্ত স্মৃতিচারন করে বলেন, সব মৃত্যু দুঃখজনক। কিন্তু কিছু ব্যক্তির মৃত্যু চিরস্মরণীয়, বিষ্ণু দত্তের মৃত্যু সেরকম। কমিউনিষ্ট নেতা হিসাবে এটা বড় প্রাপ্তি। প্রয়াত বিষ্ণু দত্ত জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন দৃঢ়চেতা। সবসময় পরামর্শ দিতেন। সারা জীবন লড়াইয়ের অনুপ্রেরনা তৈরী করে গেছেন। আজকের সময়তে বিজেপির সন্ত্রাস চলছে। কংগ্রেস জোট জমানায় প্রয়াত বিষ্ণু দত্তরা দেখিয়ে গেছেন সন্ত্রাস চিরস্থায়ী হয় না। বিজেপিও সন্ত্রাস করে পার পাবে না। জনগণকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে নেমে সন্ত্রাসকে প্রতিহত করার ডাক দেন তিনি। স্মরণসভার সভাপতি, প্রয়াত বিষ্ণু দত্তের দীর্ঘ লড়াইয়ের বড় অংশের সাথী নিখিল দাস আলোচনায় বলেন, প্রয়াত বিষ্ণু দত্ত লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এবং আদর্শে অবিচল থেকে প্রিয় নেতা হয়ে উঠেছিলেন। মির্জা-সহ গোটা এলাকায় পার্টির শক্তি বৃদ্ধি ও মিত্র শক্তি বাড়াতে বিষ্ণু দত্তের ভূমিকা অবিস্মরনীয়। দৃঢ় সাহসী ছিলেন। পার্টি থেকে সাময়িক বিচ্যুতির পরও মতাদর্শে ছিলেন বলিয়ান। সে সময়তেও পার্টিকে ভালো পরামর্শ, যুক্তি দিতে যথেষ্ট আন্তরিক ছিলেন। এরকম একজন নেতাকে স্মরণ করা মানে তার জীবন ও সংগ্রাম থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সমাজ পরিবর্তনের লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শপথ গ্রহণ করা।













































© Copyright, 2022. Tripura Prottoy, India. All Rights Reserved. Developed and Maintained by Chevichef Private Limited.

Images published in the Image Gallery are subjected to Copyright of the photographer under The Copyright Act, 1957 of the Republic of India. Any unauthorized use of any image is prohibited.