ত্রিপুরাপ্রত্যয় প্রতিনিধি, ধর্মনগরঃ আন্তর্জাতিক দাবার মঞ্চে নতুন ইতিহাস গড়ল ধর্মনগরের ক্ষুদে দাবাড়ুরা। প্রথম আসাম বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক রেটেড দাবা প্রতিযোগিতায় নজরকাড়া সাফল্য অর্জন করেছে ধর্মনগরের দুই বোন — উত্তরা দেবনাথ ও প্রেরণা দেবনাথ। সাত দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতায় ভারত ও নেপালের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ২৫০ জন প্রতিযোগী অংশ নেন।‘অনূর্ধ্ব-১৪’ বিভাগে ‘ক্লাসিকাল’ এবং ‘র্যাপিড’ — উভয় বিভাগেই অনন্য পারফরম্যান্স করেছে দেবনাথ বোনেরা। ক্লাসিকাল বিভাগে প্রেরণা দেবনাথ দ্বিতীয় এবং উত্তরা দেবনাথ তৃতীয় স্থান অর্জন করে। অন্যদিকে, র্যাপিড বিভাগে স্থান বদলে যায় — উত্তরা দ্বিতীয় ও প্রেরণা তৃতীয় স্থান অধিকার করে।উত্তর ত্রিপুরার পদ্মপুর এলাকার বাসিন্দা এই দুই প্রতিভাবান কন্যার পিতা উত্তম দেবনাথ পেশায় সাংবাদিক এবং মাতা পপসি দেবনাথ একজন গৃহিণী। পিতা উত্তম দেবনাথই তাঁদের মধ্যে দাবার প্রতি আগ্রহ জাগিয়ে তোলেন এবং প্রাথমিক পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেন।শুধু দেবনাথ বোনরাই নয়, অনূর্ধ্ব-১৪ বালক বিভাগে ধর্মনগরের দুই ভাই — অনুপম নাথ ও অভিনব নাথ যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে ধর্মনগরের নাম উজ্জ্বল করেছে। তাঁদের বাবা অনিদ্র নাথ ও মা শুকলা নাথ এই কৃতিত্বে আপ্লুত। পাশাপাশি, ১৪০০–১৫০০ রেটিং রেঞ্জের বিভাগে ধর্মনগরের শতদ্রু দাস ষষ্ঠ স্থান অর্জন করেছে। তিনি পোস্ট অফিস রোড এলাকার বাসিন্দা, পিতা সুজিত দাস এবং মাতা সবিতা চৌধুরী সন্তানের সাফল্যে গর্বিত। প্রতিযোগিতাটি ছিল ‘ওপেন টু অল’ ফরম্যাটে, যা ২৮ জুন শুরু হয়ে টানা সাত দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয়। দেশের ২৮টি রাজ্য থেকে আসা প্রতিযোগীদের বিপক্ষে ত্রিপুরার এই ক্ষুদে দাবাড়ুরা যে অসাধারণ দক্ষতা ও মানসিক দৃঢ়তা প্রদর্শন করেছে, তা রাজ্যের ক্রীড়া ইতিহাসে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করল। ক্রীড়া মহল আশাবাদী যে এই সাফল্য ত্রিপুরাকে আন্তর্জাতিক দাবার মানচিত্রে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে।