ত্রিপুরাপ্রত্যয় প্রতিনিধি, ধর্মনগর:- ধর্মনগর শহরের ঋষি অরবিন্দ লেন এলাকায় এক বিরল মানবিকতার নজির গড়লেন স্থানীয় বাসিন্দা উৎপল ভট্টাচার্য। তাঁর উদ্যোগে প্রাণে বাঁচল একটি বিলুপ্তপ্রায় নিশাচর প্রাণী Bengal Slow Loris, ঘটনার বিবরণে জানা যায়, শনিবার রাতে ঋষি অরবিন্দ লেনের এক গলিতে স্থানীয় বাসিন্দারা বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত অবস্থায় প্রাণীটিকে দেখতে পান। প্রথমে ভয়ে কেউ প্রাণীটির কাছে এগিয়ে আসেননি। কিন্তু উৎপল ভট্টাচার্য সাহস করে প্রাণীটিকে উদ্ধার করেন এবং নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। সেখানে তিনি প্রাণীটির শরীরের আঘাত পরীক্ষা করেন এবং প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। সারারাত ধরে সযত্ন পরিচর্যার পর প্রাণীটি কিছুটা সুস্থতার লক্ষণ দেখাতে শুরু করে। রবিবার সকালে উৎপল ভট্টাচার্য ধর্মনগর বনদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। খবর পেয়ে বনদপ্তরের কর্মীরা তাঁর বাড়িতে এসে প্রাণীটিকে নিজেদের হেফাজতে নেন। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাণীটির শারীরিক অবস্থার উপর বর্তমানে নজর রাখা হবে এবং সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলে সেটিকে আবার প্রাকৃতিক বাসস্থানে ছেড়ে দেওয়া হবে। বনদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, Bengal Slow Loris ভারতের একটি অত্যন্ত বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি। নিশাচর এই প্রাণীটি রাতের বেলায় খাদ্যের খোঁজে বের হয় এবং সাধারণত ঘন বনাঞ্চলে বাস করে। ভারতীয় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের প্রথম তফসিলে এই প্রজাতিটিকে বিশেষ সুরক্ষা প্রদান করা হয়েছে। এই প্রজাতির হত্যা বা শিকার আইনত দণ্ডনীয়। এই ঘটনায় উৎপল ভট্টাচার্যের সাহসী এবং মানবিক পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে এলাকাবাসী ও বনদপ্তর। স্থানীয়রা বলছেন, তাঁর মতো মানুষের কারণে সমাজে এখনও পশু-পাখির প্রতি সহমর্মিতা বেঁচে আছে।বর্তমানে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এমন বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরি। এই ধরনের সচেতনতা সাধারণ মানুষের মধ্যেই প্রাণী সংরক্ষণের সাফল্যের চাবিকাঠি হতে পারে।