নিজস্ব প্রতিনিধি, ধর্মনগর, ২১ আগস্টঃত্রিপুরা ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের তৃতীয় উত্তর ত্রিপুরা জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল ধর্মনগরের সিপিআই(এম) জেলা অফিস প্রাঙ্গণে। সুকেশ নাথ ও কমলকৃষ্ণ নাথ মঞ্চে আয়োজিত এই সম্মেলনের সূচনা হয় পতাকা উত্তোলন ও শহীদ স্মরণের মাধ্যমে।পতাকা উত্তোলন করেন ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য পরিষদের সহ সম্পাদক কান্তি লাল দেব। শহীদ স্মরণ পাঠ করেন ধর্মনগর মহকুমা পরিষদের সম্পাদক অনুকূল দাস এবং শহীদ বেদীতে মাল্যদান ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে সম্মেলনের প্রথম দফার কাজ শুরু হয়।সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণ দেন সংগঠনের রাজ্য পরিষদের সভাপতি রাধাভল্লভ দেব নাথ। তিনি বলেন “সমালোচনা ও আত্মসমালোচনার মাধ্যমে ইতিবাচক দিককে ধারণ করে এবং নেতিবাচক দিককে বর্জন করেই সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।”তিনি আরও মন্তব্য করেন, বিজেপি বলেছিল তারা ৪০০ আসন পার করবে, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে ব্যঙ্গ করে তিনি বলেন “দেশে এখন রয়েল বেঙ্গল টাইগারের যুগ চলছে। রাম নাম নিয়ে হিন্দু সমাজ বাঁচতে পারবে না, কারণ রয়েল বেঙ্গল টাইগার রাম নাম বুঝবে না। ইতিমধ্যেই উচ্চবর্ণ- নিম্নবর্ণের দ্বন্দ্ব স্পষ্টভাবে ফুটে উঠছে।”শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন পানিসাগর মহকুমা পরিষদের সম্পাদক অবনী দে। সভাপতিমণ্ডলীতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য পরিষদের সভাপতি রাধাভল্লভ দেব নাথ, সহ সভাপতি দূর্গেশ রায়, সম্পাদক শ্যামল দে, সহ সম্পাদক কান্তি লাল দেব, সদস্য প্রীতীবালা নাথ, হরিপদ গোস্বামী, রাজ্য পরিষদের সদস্য হরকুমার নাথ, মইন উদ্দিন ও জেলা পরিষদের সদস্য জয়নাল উদ্দিন। এছাড়াও গণ আন্দোলনের নেতা অভিজিৎ দে এবং রতন রায় সম্মেলনে যোগ দেন। বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম)-এর উত্তর ত্রিপুরা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অভিজিত দে। তিনি বলেন, আজকের দিনে ক্ষেতমজুর ও কৃষিশ্রমিকদের নানাভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে। একদিকে দাম না পেয়ে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি-বিরোধী নীতি সাধারণ ক্ষেতমজুরদের জীবনে চরম সংকট তৈরি করেছে। তিনি দাবি করেন, ন্যূনতম মজুরি আইন কার্যকর করা, কর্মসংস্থান প্রকল্পে ২০০ দিনের কাজ নিশ্চিত করা এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকারি সহায়তা বাড়ানো এখন সময়ের দাবি। তিনি আরও বলেন “ক্ষেতমজুরদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনই এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। গ্রামেগঞ্জে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে এবং সাধারণ মানুষকে যুক্ত করাই এখন প্রধান করণীয়।”প্রতিবেদনের উপর আলোচনা রাখেন সহ সভাপতি দূর্গেশ রায়। তিনটি মহকুমা থেকে আগত প্রতিনিধিদের মধ্যে আটজন প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন। এদিন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোট ৭০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন সম্মেলনে।