তেলিয়ামুড়া প্রতিনিধি: সিভিল সোসাইটির ডাকা ২৪ ঘণ্টার বনধের মধ্যেই বিজেপি ২৯ কৃষ্ণপুর মণ্ডলের অন্তর্গত মুঙ্গিয়াকামি বাজার প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সভা ঐতিহাসিক মোড় নিল। রামকৃষ্ণপুর শক্তিকেন্দ্রের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই সভা বানচাল করার চেষ্টা চালানো হলেও, সমস্ত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয় এক বিশাল দলত্যাগ অনুষ্ঠান। এই দিন মুঙ্গিয়াকামি বাজারের বিশাল মাঠে, পূর্ব ঘোষণানুযায়ী, ২৯ কৃষ্ণপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মাননীয় মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই দলত্যাগ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ড.) মানিক সাহা, বিজেপি প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, প্রাক্তন সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা, এবং ২৯ কৃষ্ণপুর মণ্ডল সভাপতি ধনঞ্জয় দাস সহ প্রদেশ কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।এদিন মুঙ্গিয়াকামি এলাকার সঞ্জীব দেববর্মার নেতৃত্বে ২১৩০ পরিবার—মোট ৬৪৬০ ভোটার—বিভিন্ন দল ত্যাগ করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ড.) মানিক সাহার হাত থেকে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন।মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা তার বক্তব্যে বলেন,“বিজেপি কখনো সন্ত্রাসের রাজনীতি করে না। আমাদের উন্নয়নের রাজনীতি রুখতে গতকাল জনসভা বানচাল করার লক্ষ্যে শক্তিকেন্দ্রে আক্রমণ চালানো হয়েছিল। এমনকি জনসভার মঞ্চেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। কিন্তু আমরা ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ড. মানিক সাহার নেতৃত্বে উন্নয়নমুখী প্রশাসনের উপর আস্থা রেখে এগিয়ে চলেছি। সেই আস্থার ফলেই আজ ৫,০০০ নয়, তার চেয়েও বেশি—৬,৪৬০ জন ভোটার বিজেপিতে যোগ দিলেন।”মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ড.) মানিক সাহা তার ভাষণে বলেন, “ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী উপজাতি এলাকা গুলির সামগ্রিক উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো—সবক্ষেত্রে একের পর এক জনমুখী প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য প্রতিটি পরিবারের মুখে হাসি ফোটানো।”তিনি আরও বলেন,“বিজেপি সরকার সর্বদা রাজ পরিবারের সম্মান রক্ষা করে আসছে। মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুরের জন্মদিনে সরকারি ছুটি, আগরতলা বিমানবন্দরের নামকরণ ‘মহারাজা বীর বিক্রম বিমানবন্দর’, এবং রাজ পরিবারের সদস্য প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মাকে তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ — এগুলোই সেই সম্মানের প্রতিফলন।”রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আরও আশ্বাস দেন, “ত্রিপুরার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে বসবাসকারী জনজাতি মানুষদের উন্নয়নের জন্য সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। শিক্ষার আলো থেকে শুরু করে মৌলিক চাহিদা—সব ক্ষেত্রেই আমাদের লক্ষ্য সমান উন্নয়ন।”দিনের এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান শুধুমাত্র এক রাজনৈতিক সংহতির প্রতীক নয়, বরং ত্রিপুরার রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।।