ত্রিপুরা প্রত্যয় প্রতিনিধি, ধর্মনগরঃ একসময় নীরবতার আড়ালে ঢেকে থাকা ধর্মনগর পাবলিক লাইব্রেরি এখন যেন এক নবজাগরণের ঠিকানা। পরিকাঠামো উন্নয়নে লাইব্রেরি ইনচার্জ নিরঞ্জন ত্রিপুরার নিরন্তর প্রচেষ্টায় বদলে গেছে গ্রন্থাগারের রূপ—শুধু রূপই নয়, বদলেছে বইপাঠের সংস্কৃতির মানচিত্রও।সম্প্রতি উনকোটি জেলা থেকে একদল কলেজ ছাত্রছাত্রী দলবদ্ধভাবে গ্রন্থাগারে এসে নানাবিষয়ের বই পাঠে মনোনিবেশ করেন। বহুদিন পর পাঠাগারের এমন প্রাণবন্ত পরিবেশ বইপড়ুয়াদের কাছে এক তাজা বাতাসের ঝলক। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য—এই উচ্ছ্বাসই প্রমাণ করে সাম্প্রতিক পরিকাঠামো উন্নয়ন সত্যিই ফল দিয়েছে।নিরঞ্জন ত্রিপুরা জানান, গত কয়েক মাস ধরে তিনি গ্রন্থাগারের অন্দরে সূক্ষ্ম পরিবর্তন আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরই উদ্যোগে এখন বুক শেলফগুলো আরও সুশৃঙ্খল, বই সাজানো আছে বিষয়ভিত্তিক বিভাগ অনুযায়ী, আর পাঠাগারের ভেতর তৈরি হয়েছে শান্ত, মননশীল পরিবেশ। তাঁর কথায়— “আগের মতো অগোছালো দশা নেই। এখন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ বইপ্রেমী—সবাইই স্বস্তির সঙ্গে বই পড়ছেন। পাঠকের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো বেড়েছে।”কিছুদিন আগে বিধানসভার একটি প্রতিনিধি দলও লাইব্রেরি পরিদর্শন করেন। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক বিধায়িকাগন। লাইব্রেরির দ্রুত অগ্রগতি দেখে তারা প্রশংসায় ভরিয়ে দেন এবং জানান— “ধর্মনগর জেলা গ্রন্থাগারের বর্তমান গতি সত্যিই অনুকরণীয়। এ ধরনের উদ্যোগ বইপড়ার অভ্যাসকে আরও প্রসারিত করবে।”লাইব্রেরিতে আগত উনকোটি জেলার ছাত্রছাত্রীরাও পরিবেশ ও শৃঙ্খলা দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তাদের মতে, ধর্মনগরের এই গ্রন্থাগার সহজেই রাজ্যের অন্যান্য জেলার কাছে এক সফল মডেল হতে পারে।সব মিলিয়ে, নিরঞ্জন ত্রিপুরার নেতৃত্বে নব রূপে সজ্জিত ধর্মনগর পাবলিক লাইব্রেরি আজ উত্তর ত্রিপুরার অন্যতম সেরা পাঠাগারের মর্যাদা অর্জন করছে। আর বাড়তে থাকা পাঠকসমাগম যেন নিঃশব্দে বলছে—গ্রন্থাগারে যদি থাকে সুপরিকল্পিত, শান্ত ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ, তবে পাঠকেরা নিজেরাই ফিরে আসেন বইয়ের আশ্রয়ে।